Office Hours

10am - 6pm (Friday Off)

কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা এবং এর ভবিষ্যৎ

কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা এবং এর ভবিষ্যৎ

আমাদের অনেকেরই ধারণা, কম্পিউটার বিজ্ঞান মানেই বোধ হয় কেবল প্রোগ্রামিং। অনেকে আবার বলে, কেউ কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ে মানেই সে প্রোগ্রামিং খুব ভালো পারে। কিন্তু আদতে এটি কম্পিউটার বিজ্ঞানের সিলেবাসের একটি অংশ মাত্র।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় চার বছর ধরে পুরো কম্পিউটার ব্যবস্থা এবং নেটওয়ার্কিং সম্পর্কে খুঁটিনাটি পুরোটাই শেখায় হাতে–কলমে। খুবই সাধারণভাবে বললে এই বিভাগে যা পড়ানো হয়:

প্রথম বছর—বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা যেমন সি, সি প্লাস প্লাস

দ্বিতীয় বছর—ডেটা স্ট্রাকচার (কীভাবে কোটি কোটি ডেটা একসঙ্গে রাখা হয়), অ্যালগরিদম

তৃতীয় বছর—অপারেটিং সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কীভাবে কাজ করে, হার্ডওয়্যারের বিভিন্ন কাজ, মাইক্রো কন্ট্রোলার, কম্পিউটার ইন্টারফেসিং কীভাবে হয় ইত্যাদি

চতুর্থ বছর—বর্তমান বিশ্বের জনপ্রিয় বিভিন্ন বিষয়। যেমন মেশিন লার্নিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইত্যাদি

কারা পড়বে কম্পিউটার বিজ্ঞান

কম্পিউটার বিজ্ঞান বিষয়টি তাদের জন্যই, যাদের এ নিয়ে আগ্রহ আছে। এখন কম্পিউটারের যুগ। এই গোটা যুগটা কীভাবে কম্পিউটারের হয়ে যাচ্ছে—এ সম্পর্কে জানার ইচ্ছা যাদের আছে, তাদের জন্যই কম্পিউটার বিজ্ঞান। ছোটবেলা থেকেই এখন আমরা গুগলের সঙ্গে, বিভিন্ন কম্পিউটার গেমসের সঙ্গে পরিচিত হই।

যেমন ধরুন, কোনো শুটিং গেমে আমি যখন মাউসে ক্লিক করছি, কীভাবে পর্দায় গুলি করার দৃশ্য দেখতে পাচ্ছি? গুগলে কোনো কিছু লিখে খুঁজলেই কীভাবে গুগল আমাদের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কাঙ্ক্ষিত ফল এনে দিচ্ছে?

এসব নিয়ে যাদের মাথায় চিন্তা আসে, যারা ভেতরের ব্যাপারগুলো জানতে চায় এবং এমন আরও নতুন কিছু তৈরি করতে চায়, তাদেরই কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়া উচিত।

কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়তে হলে গণিত, যুক্তি ইত্যাদি খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তবে কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়তে হলে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন, তা হলো লেগে থাকার অভ্যাস আর ধৈর্য। বিভিন্ন সমস্যা সমাধান করতে কখনো কখনো দিনের পর দিন লেগে থাকতে হয়।

কম্পিউটার বিজ্ঞানের সিলেবাসটাও দেখা যায় বেশ বড় এবং পড়ালেখার চাপটাও একটু বেশি। মাঝেমধ্যে ছুটির দিনেও ঘরে বসে কাজ করতে হয়। কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলে পড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হবে।

ভবিষ্যৎ কী

কম্পিউটার বিজ্ঞান একজন শিক্ষার্থীর সামনে অনেক ধরনের রাস্তা খুলে দেয়। কেউ যদি চাকরি করতে চায়, সেই সুযোগ আছে এবং বাড়ছে। কেউ যদি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করতে চায়, উদ্যোক্তা হতে চায়, তা-ও সে করতে পারে।

আবার কম্পিউটার বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গবেষণারও সুযোগ আছে অনেক। বাংলাদেশ থেকে যেসব শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য যায়, তাদের একটা বড় অংশই কিন্তু কম্পিউটার বিজ্ঞানের স্নাতক।

প্রতিদিন কম্পিউটার আগের চেয়েও উন্নত হচ্ছে, তৈরি হচ্ছে আরও নতুন নতুন কাজের সুযোগ।

ক্যারিয়ার কোথায়

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় একটা উচ্চশিক্ষার বিষয় হচ্ছে কম্পিউটার বিজ্ঞান। ব্যাপারটা কিন্তু এমনি এমনি হচ্ছে না। কিংবা প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়েই কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ানো হয় বলে এর চাহিদা কমে গেছে, তা-ও নয়।

বরং চাহিদা বাড়ছে বলেই প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় বিষয়টি চালু করেছে। পৃথিবী দিন দিন কম্পিউটার–নির্ভর হচ্ছে, এই বিষয়ে পড়ে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগও বাড়ছে। আমাদের দেশেই এখন অনেক কম্পিউটার ফার্ম আছে, কম্পিউটার বিজ্ঞানে পড়ে যেখানে ‘ডেভেলপার’ হিসেবে যোগদান করার সুযোগ আছে।

এ ছাড়া ধীরে ধীরে সরকারি বিভিন্ন ক্ষেত্রেও কম্পিউটার প্রকৌশলীদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আর কম্পিউটার বিজ্ঞান কিন্তু নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলার জন্যও এক অসাধারণ সুযোগ। অনেককেই দেখা যায় কম্পিউটার বিজ্ঞানে স্নাতক শেষ করে বিভিন্ন স্টার্টআপ শুরু করতে।আমাদের দেশে ও দেশের বাইরে গুগল, সিসকো, ফেসবুকসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরির সুযোগ তো আছেই। তবে এসব জায়গায় চাকরির জন্য অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক প্রোগ্রামিংয়ে পারদর্শী হতে হবে।

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

Related Posts

সেরা ৮০০-তে নেই বাংলাদেশের কোন বিশ্ববিদ্যালয়!

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেন সেরা ৮০০-তে নেই? যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ সম্প্রতি প্রকাশ করেছে বিশ্বের শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিং ২০২৫। তবে দুঃখজনকভাবে, এই মর্যাদাপূর্ণ তালিকার

বিদেশে পড়তে যাওয়ার এক বছর আগে করণীয় বিষয়সমূহ কী?

বিদেশে পড়তে যাওয়ার আগে সঠিক পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। এটি একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া, তাই যথাযথ সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। নিচে ১৫টি গুরুত্বপূর্ণ

বিদেশে পড়তে চাই, কিন্তু কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রোগ্রাম আমার জন্য

বিদেশে পড়তে চাই, কিন্তু কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রোগ্রাম আমার জন্য? অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখে, কিন্তু সঠিক বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রোগ্রাম নির্বাচন করতে গিয়ে বিভ্রান্তিতে

উচ্চশিক্ষার জন্য IELTS এর A to Z সমাধান

আইইএলটিএস (IELTS) হচ্ছে International English Language Testing System যেটা ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পরীক্ষা। আপনার মাতৃভাষা যদি ইংরেজি না হয় তাহলে

স্কলারশীপ নিয়ে চন্ডিগড় ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ

ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রদেশ এর রাজধানী চন্ডিগড় শহরে অবস্থিত চন্ডিগড় ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশীশিক্ষার্থীদের জন্য ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট ও ডক্টরেট প্রোগ্রামে স্কলারশীপসহসীমিত সংখ্যক আসনে

Study Abroad Scholarships

Study Abroad Scholarships. Although a lot of Bangladeshi students aspire to attend Universities aboard for further education, they are quite often held back by financial

বিবিএ নিয়ে পড়াশুনা এবং এর ক্যারিয়ার

জব বস্থাপনার সার্বিক নীতি, পদ্ধতি, মডেল ও তত্ত্ব পড়ানোর মাধ্যমে ব্যক্তি যেমন ব্যবসা পরিচালনা সম্পর্কে জানতে পারেন, তেমনি জানতে পারেন ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের নিয়ন্ত্রণ

কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা এবং এর ভবিষ্যৎ

আমাদের অনেকেরই ধারণা, কম্পিউটার বিজ্ঞান মানেই বোধ হয় কেবল প্রোগ্রামিং। অনেকে আবার বলে, কেউ কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ে মানেই সে প্রোগ্রামিং খুব ভালো পারে। কিন্তু আদতে

“ল” নিয়ে কেন পড়াশুনা করবেন?

দেশের প্রায় প্রতিটি পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েই অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন বিষয় আইন। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কোর্স পড়ানো হয়। তবে সার্বিকভাবে আইন পড়তে হলে কিছু বিষয় একজনকে

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি এবং এর ভবিষ্যৎ

কারা পড়বে? যন্ত্রকৌশলকে আমরা ইংরেজিতে বলি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রকৌশল জগতের মানুষেরা এই বিষয়কে ‘মাদার অব ইঞ্জিনিয়ারিং’ও বলেন। আমাদের চারপাশের প্রতিটা জিনিস; যা নড়ছে, ভাঙছে—এর সবই

ফার্মেসি কি? কেনই বা ফার্মেসি নিয়ে পড়াশুনা করবেন?

ফার্মেসি কী? ফার্মেসি ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি’ একটি বিষয় এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা। সহজভাবে এটি হলো ওষুধবিজ্ঞান। ওষুধ বানানো, এর মান নির্ধারণ, ব্যবহার, বিতরণ, পরিবেশন—এসবই এর

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিংয়ের পদ্ধতি:-

আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান নিয়ে নীতিনির্ধারকদের তেমন মাথাব্যথা না থাকলেও ছাত্র-শিক্ষক, জ্ঞানী-গুণী মহল বেশ সচেতন। বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী র‍্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলাফল প্রকাশিত হলে