Office Hours

10am - 6pm (Friday Off)

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিংয়ের পদ্ধতি:-

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিংয়ের পদ্ধতি:-

আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান নিয়ে নীতিনির্ধারকদের তেমন মাথাব্যথা না থাকলেও ছাত্র-শিক্ষক, জ্ঞানী-গুণী মহল বেশ সচেতন। বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী র‍্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলাফল প্রকাশিত হলে গরম হয়ে ওঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।

কিছু কিছু প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াও বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে এগুলোর ফলাফল। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং কীভাবে করা হয়- এ সম্পর্কে অনেকের ধারণা স্পষ্ট নয়। আমার এ লেখাটির উদ্দেশ্য হল দুটি- ১. কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাংকিং করা হয়, ২. কীভাবে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বর্তমান অবকাঠামোর সামান্য পরিবর্তন করে র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে আসতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা।

বৈশ্বিক র‍্যাংকিংয়ের জন্য সবচেয়ে প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী র‍্যাংকিং তৈরি করে থাকে কুয়াককুয়ারলি সিমন্ডস (QS), টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) এবং সাংহাই র‍্যাংকিং কনসালটেন্সি- যেটি একাডেমিক র‍্যাংকিং অব ওয়ার্ল্ড ইউনিভারসিটিজ (ARWU) নামেও পরিচিত।

এছাড়াও আরও প্রায় ২০টির মতো বৈশ্বিক র‍্যাংকিং প্রতিষ্ঠান রয়েছে। QS, THE ও ARWU-সহ প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই গবেষণায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কৃতিত্বের বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়। একেকটি প্রতিষ্ঠান একেক ধরনের পারফরম্যান্স ইনডিকেইটর ব্যবহার করে।

QS র‍্যাংকিং ২০২১ অনুযায়ী, ১০০ পয়েন্টে ১০০ নিয়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে ম্যাসাচুসেটস ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (এমআইটি, অর্জিত পয়েন্ট ১০০)। অন্যদিকে THE র‍্যাংকিং ২০২০-এ বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ধরে রেখেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।

২০১৭ সাল থেকে টানা চার বছর THE র‍্যাংকিং অনুযায়ী এক নম্বরে অবস্থান করছে এ বিশ্ববিদ্যালয়টি। আর ARWU র‍্যাংকিং ২০১৯ অনুযায়ী বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হল হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়, যার অবস্থান QS র‍্যাংকিং ২০২১-এ ৩য় এবং THE র‍্যাংকিং ২০২০-এ ৭ম।

প্রতিটি র‍্যাংকিং সম্পর্কে যেহেতু এখানে আলাদা করে আলোচনা করা সম্ভব নয়, সেহেতু শুধু QS র‍্যাংকিং নিয়ে আলোকপাত করব। কিউএস মোট ছয়টি পারফরম্যান্স ইনডিকেটরের মাধ্যমে র‍্যাংকিং করে থাকে (মোট স্কোর ১০০)। এগুলো হল- প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম (৪০ শতাংশ); চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সুনাম (১০০ শতাংশ); ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাত (২০ শতাংশ); শিক্ষকপ্রতি সাইটেশনের সংখ্যা (২০ শতাংশ); আন্তর্জাতিক শিক্ষকের সংখ্যা (৫ শতাংশ); আন্তর্জাতিক ছাত্রের সংখ্যা (৫ শতাংশ)।

প্রাতিষ্ঠানিক সুনাম : এটি পরিমাপ করার ভিত্তি হল জরিপ। এর জন্য সারা বিশ্বের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বিজ্ঞানীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাদের নিজস্ব গবেষণা বিষয়ে সেরা কাজটি বর্তমানে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা করছেন।

প্রাতিষ্ঠানিক সুনামকে ৪০ শতাংশ পয়েন্ট দেয়ার কারণ হল এতে করে সারা বিশ্বের গবেষকদের মতামত পরিলক্ষিত হয়। ২০২০ সালে প্রায় ১ লাখ গবেষক ও শিক্ষাবিদ এ জরিপে অংশ নিয়েছিলেন। এই ৪০ শতাংশ পয়েন্টের জন্য ভালো করতে হলে গবেষণা খাতে প্রচুর বরাদ্দ দরকার। সরকার চাইলে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়ে ধীরে ধীরে এ কাজটি করতে পারে।

চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে সুনাম : এটিও করা হয় জরিপের মাধ্যমে। এর জন্য চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তাদের মতে বর্তমানে কোন বিশ্ববিদ্যালয় সবচেয়ে দক্ষ, উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন এবং কার্যকর গ্র্যাজুয়েট তৈরি করছে। এ ইনডিকেটরের মাধ্যমে ছাত্ররা বুঝতে পারে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের চাহিদা চাকরিবাজারে বেশি।

মজার ব্যাপার হল, কোনো প্রতিষ্ঠান যদি বিদেশি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে ভোট দেয় তাহলে তার পয়েন্ট বেড়ে যায়। কারণ এর মাধ্যমে বোঝা যায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের সুনাম বিদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ২০২০ সালে প্রায় ৫০ হাজার চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান এ জরিপে অংশ নিয়েছিল।

এখন প্রশ্ন হল, আমাদের দেশের চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এ জরিপে সাড়া দেয় কিনা সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এ ব্যাপারে কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দেয়া না থাকলে, আমার ধারণা, আমাদের দেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এতে অংশ নেবে না। যদিও এটি মাত্র দশ ভাগ।

কিন্তু এটি করা অনেক সহজ এবং তেমন ব্যয়সাধ্য নয়। শুধু দরকার সচেতনতা। এটি ঠিকভাবে নিশ্চিত করা গেলে আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিং একটু হলেও উপরে উঠবে।

ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত : ১০০ পয়েন্টের মধ্যে ২০ পয়েন্ট রাখা হয় এ ইনডিকেটরের জন্য। সুতরাং এটি র‍্যাংকিংয়ে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এর উদ্দেশ্য হল পরোক্ষভাবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পড়ানোর মান যাচাই করা। মনে করা হয়, ছোট ক্লাস সাইজ হলে পড়ানোর মান ভালো হয়। ছাত্ররা শিক্ষকদের কাছে ভালো সেবা নিতে পারে বা শিক্ষকরা ভালো সেবা দিতে পারেন।

এ ইনডিকেটরটা উন্নত করা একটু কঠিন। কিন্তু সঠিক পরিকল্পনা থাকলে অনেক এগিয়ে নেয়া সম্ভব। নতুন নতুন বিভাগ না খুলে, প্রতিষ্ঠিত বিভাগগুলোতে শিক্ষকের সংখ্যা বাড়িয়ে এ ভাগে বেশি মার্কস নিয়ে আসা সম্ভব। কত সংখ্যক গ্র্যাজুয়েট তৈরি হল তা না কাউন্ট করে কত সংখ্যক ভালো গ্র্যাজুয়েট বের হল সেটি বিবেচনায় আনা উচিত।

শিক্ষকপ্রতি সাইটেশনের সংখ্যা : সাইটেশন মানে হল কোনো একটা গবেষণাপত্র অন্য কোনো গবেষণাপত্রে সাইট করা বা রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা। জার্নালের ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টরও এ সাইটেশন গণনার মাধ্যমে করা হয়। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বমোট সাইটেশন তার সর্বমোট শিক্ষক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়, যাতে বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সুবিধা না নিতে পারে।

সাইটেশন গবেষণার মানের ওপর নির্ভরশীল। ভালো মানের কাজ না হলে আমাদের পেপার ভালো জার্নালে প্রকাশ হবে না এবং কেউ রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করবে না। উন্নত কাজের সঙ্গে আবার সেই উন্নতমানের গবেষণাগার এবং সেই সঙ্গে গবেষণার সুযোগ-সুবিধার বিষয়টি সম্পর্কিত।

তার মানে প্রথম ইনডিকেটরের ৪০ শতাংশ এবং এ ইনডিকেটরের ২০ শতাংশ- সব মিলিয়ে ৬০ শতাংশ পয়েন্ট প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে গবেষণার সঙ্গে জড়িত। এক্ষেত্রে ভালো করতে হলে শুধু বিজ্ঞান গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ালে হবে না; আর্টস, সোশ্যাল সায়েন্স, বাণিজ্য- সব বিষয়ে গবেষণা বাড়াতে হবে এবং ভালো জার্নালে প্রকাশনা করতে হবে।

তা না হলে যখন সর্বমোট সাইটেশন তার সর্বমোট শিক্ষক সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হবে তখন অবিজ্ঞান শাখার শিক্ষকদের কম সাইটেশনের কারণে টোটাল স্কোর কমে যাবে। মোদ্দা কথা, র‍্যাংকিংয়ে এগোতে হলে গবেষণা বাড়াতে হবে।

আন্তর্জাতিক শিক্ষকের সংখ্যা : এ ইনডিকেটরটি খুব ইন্টারেস্টিং। তার মানে র‍্যাংকিংয়ের শতকরা পাঁচভাগ নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কত সংখ্যক বিদেশিকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারল তার ওপর।

আন্তর্জাতিক ছাত্রের সংখ্যা : আন্তর্জাতিক শিক্ষকের সংখ্যার পাশাপাশি কিউএস আন্তর্জাতিক ছাত্রের সংখ্যাও ইনডিকেটর হিসেবে রেখেছে। এটি করা খুব সহজ। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি ছাত্রদের জন্য সহজে ভর্তির শর্ত এবং নিরাপত্তা বাড়িয়ে এ ইনডিকেটরটায় ভালো করা সম্ভব।

এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হল, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বা সরকারের লিগ টেবলে বা র‍্যাংকিংয়ে এগিয়ে আসার সদিচ্ছা আছে কিনা থাকলেও সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এটিকে কতটুকু গুরুত্ব দিচ্ছে

Share:

Facebook
Twitter
Pinterest
LinkedIn

Most Popular

Get The Latest Updates

Subscribe To Our Weekly Blog

No spam, notifications only about new products, updates.

Related Posts

উচ্চশিক্ষার জন্য IELTS এর A to Z সমাধান

আইইএলটিএস (IELTS) হচ্ছে International English Language Testing System যেটা ইংরেজি ভাষার দক্ষতা যাচাইয়ের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি পরীক্ষা। আপনার মাতৃভাষা যদি ইংরেজি না হয় তাহলে

স্কলারশীপ নিয়ে চন্ডিগড় ইউনিভার্সিটিতে উচ্চ শিক্ষার সুযোগ

ভারতের পাঞ্জাব ও হরিয়ানা প্রদেশ এর রাজধানী চন্ডিগড় শহরে অবস্থিত চন্ডিগড় ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশীশিক্ষার্থীদের জন্য ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে আন্ডারগ্রাজুয়েট, পোস্ট গ্রাজুয়েট ও ডক্টরেট প্রোগ্রামে স্কলারশীপসহসীমিত সংখ্যক আসনে

Study Abroad Scholarships

Study Abroad Scholarships. Although a lot of Bangladeshi students aspire to attend Universities aboard for further education, they are quite often held back by financial

বিবিএ নিয়ে পড়াশুনা এবং এর ক্যারিয়ার

জব বস্থাপনার সার্বিক নীতি, পদ্ধতি, মডেল ও তত্ত্ব পড়ানোর মাধ্যমে ব্যক্তি যেমন ব্যবসা পরিচালনা সম্পর্কে জানতে পারেন, তেমনি জানতে পারেন ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের নিয়ন্ত্রণ

কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা এবং এর ভবিষ্যৎ

আমাদের অনেকেরই ধারণা, কম্পিউটার বিজ্ঞান মানেই বোধ হয় কেবল প্রোগ্রামিং। অনেকে আবার বলে, কেউ কম্পিউটার বিজ্ঞান পড়ে মানেই সে প্রোগ্রামিং খুব ভালো পারে। কিন্তু আদতে

“ল” নিয়ে কেন পড়াশুনা করবেন?

দেশের প্রায় প্রতিটি পাবলিক কিংবা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়েই অন্যতম চাহিদাসম্পন্ন বিষয় আইন। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কোর্স পড়ানো হয়। তবে সার্বিকভাবে আইন পড়তে হলে কিছু বিষয় একজনকে

মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কি এবং এর ভবিষ্যৎ

কারা পড়বে? যন্ত্রকৌশলকে আমরা ইংরেজিতে বলি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং। প্রকৌশল জগতের মানুষেরা এই বিষয়কে ‘মাদার অব ইঞ্জিনিয়ারিং’ও বলেন। আমাদের চারপাশের প্রতিটা জিনিস; যা নড়ছে, ভাঙছে—এর সবই

ফার্মেসি কি? কেনই বা ফার্মেসি নিয়ে পড়াশুনা করবেন?

ফার্মেসি কী? ফার্মেসি ‘মাল্টি ডিসিপ্লিনারি’ একটি বিষয় এবং স্বাস্থ্যবিজ্ঞানের একটি বিশেষ শাখা। সহজভাবে এটি হলো ওষুধবিজ্ঞান। ওষুধ বানানো, এর মান নির্ধারণ, ব্যবহার, বিতরণ, পরিবেশন—এসবই এর

আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‍্যাংকিংয়ের পদ্ধতি:-

আন্তর্জাতিক র‍্যাংকিংয়ে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থান নিয়ে নীতিনির্ধারকদের তেমন মাথাব্যথা না থাকলেও ছাত্র-শিক্ষক, জ্ঞানী-গুণী মহল বেশ সচেতন। বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত ও প্রভাবশালী র‍্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলোর ফলাফল প্রকাশিত হলে

India

Jain University

Chandigarh University

Rajarambapu Institute of Technology

DIT University

Bachelor of Pharmacy in DIT University

China

Study In China Pharmaceutical University

Study In Dalian Medical University

Study In Fujian Medical University

Study In Jinzhou Medical University

Study In Nanjing University of Information Science & Technology

malaysia

City University

Inti University

Study In Putra University

Study In Segi University

Study In The Asia Pacific University of Technology and Innovation

UK